গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা ও হামলার ঘটনায় ই-প্রেস ক্লাবের তীব্র শোক, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ

প্রতিনিধির ছবি

প্রতিনিধি: নিজস্ব প্রতিবেদক

এলাকা: ডেস্ক

গাজীপুরে এক সাংবাদিককে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা এবং আরেক সাংবাদিককে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানোর ঘটনায় আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন ই-প্রেস ক্লাব গভীর শোক, তীব্র ক্ষোভ এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি বলেছে, “এটি শুধু দুটি জীবন নয়, পুরো সাংবাদিকতা পেশার ওপর এক ভয়ঙ্কর আঘাত।”

গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার একটি এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর সাহসী স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিন। একই দিনে একইভাবে হামলার শিকার হন দৈনিক বাংলাদেশের আলো-এর সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন সৌরভ, যিনি বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন হাসপাতালে।

এই বর্বর ঘটনার পর এক তীব্র প্রতিক্রিয়ায় ই-প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলুল কবীর বলেন,
“যেখানে সত্য বলা অপরাধ, সেখানে সাংবাদিকদের কলম রক্তে রঞ্জিত হয়। এই নৃশংসতা শুধু একজন সাংবাদিককে হত্যা করেনি—এটি গণমাধ্যমের মুখে আঘাত করেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে রক্তাক্ত করেছে, এবং গণতন্ত্রকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। এই দেশের মাটিতে যদি সত্য বলার কারণে একজন সাংবাদিককে জীবন দিতে হয়, তবে তা স্বাধীনতার চেতনার সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতা। সরকারকে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড ও হামলায় জড়িত, তাদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে—না হলে এই আতঙ্কের ঢেউ থামবে না, বরং আরও ভয়াল হয়ে ছড়িয়ে পড়বে।”

সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ই-প্রেস ক্লাব তিন দফা দাবি জানিয়েছে—
১. সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার দ্রুত, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নিহতের পরিবারকে অবশ্যই উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২. সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত বিশেষ আইন প্রণয়ন এবং জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিক সুরক্ষা কাঠামো গঠন করতে হবে।
৩. সাংবাদিকদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন ই-প্রেস ক্লাব স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে—সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে দেশের গণমাধ্যম স্বাধীনতা চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে এবং এর প্রভাব সরাসরি পড়বে গণতন্ত্রের ভিত্তির ওপর। সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়,
“গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কোনো দয়ার দান নয়—এটি মানুষের জন্মগত অধিকার। আর এই অধিকারের জন্য যারা কলম ধরেন, তাদের রক্তে যদি রাষ্ট্রের মাটি রঞ্জিত হয়, তবে তা শুধু নিন্দনীয় নয়, বরং রাষ্ট্রব্যবস্থার এক চরম ব্যর্থতা। আমরা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অবিলম্বে কঠোর, কার্যকর ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ দেখতে চাই।”

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর দেখুন